আমরা যত বড়ই হই না কেন, কখনও কখনও মনের গভীরে ডুব দিলে দেখতে পাই নিজেদের কৈশোরকে । হয়তো দেখার চোখ বদলে যায়, কিন্তু কৈশোর তার নিজের জায়গাতেই স্বমহিমায় থাকে । তবে কিনা কৈশোরেরও সেকাল-একাল আছে বৈকি । অনিবার্য কিছু সামাজিক পরিবর্তন এখনকার ছোটদের চাহিদাকেও বদলে দিয়েছে । সেই বদলে যাওয়া শৈশব-কৈশোরকে ছুঁয়ে দেখতে চাওয়ার পাশাপাশি 'ভালো রবিবার' বড়দের হারানো শৈশবকেও খুঁজে পেতে চায় ; ঠিক যেমন করে বহু বছর পরে কোন বইয়ের ফাঁক থেকে বেরিয়ে আসে ছোটবেলার আঁকা একটা ছবি কিংবা আঁকাবাঁকা হস্তাক্ষরে লেখা ছড়া ... কয়েক বছর আগে যখন 'ভালো রবিবার' ছোটোদের ক্রিয়েটিভ ফোরাম হিসেবে তার চলা শুরু করেছিল তখন তার উদ্যেশ্য ছিল মূলত রবিবারের সকাল গুলোয় ছোটোদের ছবি আঁকা, হাতের কাজ, কবিতা পড়া, গল্প বলার মত কিছু সৃষ্টিশীল কাজকর্মে ব্যস্ত রাখা । তখনো ভারচুয়াল দুনিয়ায় এর অস্তিত্ব বিষয়ে কোনো পূর্বানুমান ছিল না । মারন ভাইরাস কোভিড 19 যখন থেকে পৃথিবী কে ব্যতিব্যস্ত করতে শুরু করলো, তখন থেকে সারা বিশ্বের মতো এই বাংলাতেও শিশুদের শৈশব-কৈশোর এলোমেলো হয়ে যেতে লাগল । তাদের স্কুল- বন্ধুবান্ধব-খেলার মাঠ সব হারিয়ে গিয়ে তার জায়গা নিতে লাগল চার দেওয়ালে ঘেরা একঘেয়েমি আর মন খারাপের দিনগুলো । বন্ধ হয়ে গেল রবিবার সকালের হই হই করা জমায়েত । তখন থেকেই ভালো রবিবারের ভাবনা বদলাতে শুরু করে । যার বিস্তার ছোটো একটা হোয়াটস্যাপ গ্রুপ থেকে শুরু হয়ে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আরও বেশী সংখ্যক ছোটোদের কাছে ভালো রবিবারকে উপস্থাপিত করার পরিকল্পনা পর্যন্ত । ধীরে ধীরে ছোটদের সঙ্গে বড়রাও এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছেন । প্রতি রবিবারে হোয়াটস্যাপ এ শিশুদের নিয়ে চলা সৃষ্টিশীল কাজ কর্মের পাশাপাশি প্রকাশিত হচ্ছে 'ভালো রবিবার' ই-পত্রিকা । গত বছরে প্রথম শারদীয়া সংখ্যা প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে খুদে এবং বড় পাঠকদের যে বিপুল সাড়া পাওয়া গিয়েছিল মূলত তার প্রেরণাতেই ভালো রবিবার আরো আরো প্রকাশনার দিকে এগিয়ে যাওয়ার সংকল্প নিয়েছে । এই অনলাইন উদ্যোগে যাঁরা আমাদের সঙ্গে থাকছেন তাঁদের ধন্যবাদ । আমরা আশা রাখি আজকে যারা ছোট, অনেক বছর পরে যখন তারা বড় হয়ে যাবে - তখন 'ভালো রবিবার' তাদের একটা সুখস্মৃতির নাম হবে ।